শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বার ২০২৫,

একেএম সাইফুল ইসলাম চৌধুরী

ছদাহার ব্যাংকার থেকে সফল চাষী শিক্ষানুরাগী জনাব একেএম সাইফুল ইসলাম চৌধুরী

ছদাহার  মানুষের প্রিয় ব্যক্তিত্ব আলোকিত মানুষ শিক্ষানুরাগী  জনাব একেএম সাইফুল ইসলাম চৌধুরী। সর্বজন শ্রদ্ধেয় জনাব একেএম সাইফুল চৌধুরী ঐতিহ্যবাহী মিয়া বাড়ীর কৃতি সন্তান ছদাহার প্রথম গ্রাজুয়েট (১৯৫৮ সন) জনাব সমশুল ইসলাম চৌধুরীর প্রথম সন্তান । 

জনাব সাইফুলের  প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি  ছদাহা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।  মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন অবিভক্ত সাতকানিয়ার প্রাচীন বিদ্যাপীঠ দক্ষিণ সাতকানিয়া গোলাম বারী উচ্চ বিদ্যালয় এবং সাতকানিয়া কলেজ থেকে ১৯৭৮ ও ১৯৮০ সনে কৃতিত্বের সাথে ১ম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ১৯৮৩ এবং ১৯৮৪ শিক্ষা বর্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে বি,এস,এস (অনার্স)  এবং মাষ্টার্স পরীক্ষায় অসাধারণ  কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন।চাকুরীরত অবস্থায় তিনি এম,বি,এ ডিগ্রী অর্জন করেন।

শিক্ষাজীবন শেষে 'দি সিটি ব্যাংক' -এ প্রবেশনারী অফিসার পদে যোগদান করেন। পরে ব্যাংক এশিয়ার উচ্চ পদে যোগদান করেন। বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করে  সর্বশেষ  ব্যাংক এশিয়ায়  এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং চট্টগ্রামের 'আঞ্চলিক প্রধান' হিসাবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি ব্যাংক এশিয়ার কর্পোরেট অফিসে "Corporate & Large Loan Division" -এ কর্মরত আছেন। পেশাগত কারনে হংকং এবং চীন সফর করেন। এছাড়াও সৌখিন ভ্রমণ পিপাসু   ও দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণে সিঙ্গাপুর, মালয়শিয়া, থাইল্যান্ড সফর করেন।

জনাব সাইফুল চৌধুরী শুধু একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকার নয়, সফল চাষীও।  অত্যন্ত মার্জিত ও সৌখিন এ নিভৃতচারী শখের বশে ছদাহায় বিদেশী এবং দেশী বিভিন্ন প্রজাতির ফলের বাগান ও মাছ চাষ করেছেন এবং সেখানে নান্দনিক পরিবেশে গড়ে তোলা বাংলোতে অবসর কাটাতে পছন্দ করেন।  

আধুনিক  ছদাহার ইতিহাসে জনাব একেএম সাইফুল ইসলাম চৌধুরী একজন জীবন্ত কিংবদন্তি। ছদাহার শিক্ষা ও সমৃদ্ধিতে তাঁর অবদান অতুলনীয়। তিনি বিশ্বাস করেন,  সুশিক্ষিত এবং কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন একটি জনগোষ্ঠীই পারে একটি টেকসই এবং সার্বিক সচ্ছল সমাজ বিনির্মাণ করতে। এ বিশ্বাস থেকেই তিনি কৃতি শিক্ষার্থীদের নানাভাবে  সহযোগিতা ও প্রতিষ্ঠিত করতে  উদ্যোগী হন। তাঁর সহযোগিতা, পরামর্শ ও এককালীন বৃত্তি পেয়ে অসংখ্য শিক্ষার্থী উন্নত জীবনের ছোঁয়া পেয়েছেন। তারেক ও নাঈমার মতো শিক্ষার্থী সেসবের বড় উদাহরণ। ছদাহার যুব সমাজকে দক্ষ ও স্বনির্ভর হিসাবে গড়ে তুলতে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ছদাহা টেকনিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট। যেখানে গত দুবছরে শতশত শিক্ষার্থী নামেমাত্র টাকায় ট্রেনিংয়ের সুযোগ পেয়েছেন।  সমাজের সকলকে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে, এই প্রেরণায় যেকোন সৃজনশীল কাজে তাঁর ভূমিকা অগ্রগণ্য। 

জনাব চৌধুরী পেশাগত কাজের বাইরে বহু সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অনেক ফোরাম ও সংগঠনের। আজীবন সদস্য হিসাবে আছেন চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল, ডায়াবেটিক সমিতি, চট্টগ্রাম বোট ক্লাব, শাহীন গল্ফ এন্ড কান্ট্রি ক্লাব এবং 'চট্টগ্রাম ক্লাব লিমিটেড' এর কর্পোরেট সদস্য।
এছাড়া  নগরীর  মেট্রোপলিটন ক্লাব লিমিটেড'র প্রাক্তন চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া  ছদাহা ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা উপদেষ্টা ও সিনিয়র মেন্টর আর প্যাট্রন। এসবের বাইরে তিনি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও সাধ্যমত সহযোগিতা করেন। নির্মাণ ও সহযোগিতা  করেছেন বহু ফোরকানিয়া মাদ্রাসা ও মসজিদ তৈরিতে। পূর্ব ছদাহার  জিলানী নগরের মরহুম শামসুল ইসলাম মাস্টার ফোরকানিয়া মাদ্রাসা ও এবং সংলগ্ন দৃষ্টি নন্দন মসজিদটি তাঁরই আন্তরিক সহযোগিতায় নির্মিত হয়। স্রষ্টার সন্তুষ্টির জন্য  ২০১১ সালে হজ্জ পালন করেছেন। 

আশৈশব ছদাহা গ্রামে বেড়ে উঠা চির তরুণ জনাব চৌধুরী বরাবরই গ্রাম তাঁর হৃদয়ে সারাক্ষণ জড়িয়ে থাকে। তাই পাড়া প্রতিবেশীর টানে গ্রামে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন এবং আবাল বৃদ্ধ বনিতা সবার সাথেই নি:সংকোচে মিশতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। যেকারণে তিনি সবার পছন্দের ও প্রিয়মুখ।  বর্তমানে তিনি গ্রামে অবসর সময় পালন করছেন এবং তিনি চাষী হিসেবে নিজের খামার দেখাশোনা করেন

সহজাত প্রচারবিমুখ এ ব্যক্তিত্ব ২ (দুই) সন্তানের একজন সার্থক পিতা। প্রথম সন্তান ওমর সাদাব চৌধুরী গাজিপুরস্থ OIC পরিচালিত  আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় 'IUT' থেকে সিভিল এন্ড এনভায়রনটাল ইন্জিনিয়ারিং বিষয়ে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে চ্যান্সেলর এওয়ার্ড সহ গোল্ড মেডাল অর্জনের বিরল কৃতিত্ব লাভ করেন। বর্তমানে তিনি মেধাবৃত্তি নিয়ে কানাডার বিশ্বখ্যাত Waterloo University 'তে এনভায়রনমেন্টাল ইন্জিনিয়ারিং বিষয়ে পিএইডিতে অধ্যয়নরত আছেন। তাঁর পরিচালিত গবেষনাপত্র (থিসিস পেপার) ওয়াশিংটনে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান লাভ করে বিরল পুরষ্কারে ভুষিত হয়।দ্বিতীয় সন্তান আজমান রাকিন চৌধুরী 'O' এবং 'A' লেভেলের পরীক্ষায় সকল বিষয়ে A+ পাওয়ার পর আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলের উচ্চমান সম্পন্ন সুপ্রাচীন এবং খ্যাতিমান বিশ্ববিদ্যালয় 'The University of Hong Kong' [HKU] থেকে সম্পুর্ণ স্কলারশিপ নিয়ে সিভিল ইন্জিনিয়ারিং বিষয়ে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি হংকং এ বৃহৎ একটি কন্সট্রাকশন কনসালটেন্সি কোম্পানিততে কর্মরত আছেন।