
জিসানের ফাইল ফটো
ইউএনডিপি থেকে সেরা ডিজাইনারের স্বীকৃতি সাতকানিয়া ছদাহার জিসান
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার ছদাহা কেফায়েত উল্লাহ ও কবির আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে শুরু, আর সেখান থেকেই মেধা ও পরিশ্রমের বীজ বপন করেছিলেন আব্দুল্লাহ সাঈদ জিসান। সেই বীজ আজ অঙ্কুরিত হয়ে এক সফলতার মহীরুহ হয়ে উঠেছে, যার স্বীকৃতি মিলেছে খোদ ইউএনডিপি (UNDP) বাংলাদেশ-এর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে। গ্রামীণ পরিবেশে বেড়ে ওঠা এক তরুণ কীভাবে নিজেকে একজন আন্তর্জাতিক মানের ডিজাইনার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করলেন, সেই গল্পই অনুপ্রেরণা জোগায় শত শত তরুণকে।
শিক্ষার পথে দৃঢ় পদক্ষেপ
এসএসসি পরীক্ষায় এ+ এবং এইচএসসিতে এ গ্রেড নিয়ে জিসান প্রমাণ করেছিলেন তার শিক্ষাগত মেধার উজ্জ্বলতা। এরপর বান্দরবান সরকারি কলেজ থেকে ম্যানেজমেন্টে ফার্স্ট ক্লাস নিয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। গতানুগতিক পেশার দিকে না ঝুঁকে তিনি অনুসরণ করেন তার ভেতরের সৃজনশীল সত্তাকে। অনার্স চলাকালীন সময়েই তিনি ডিজাইনের জগতে প্রবেশ করেন। শেখা ও কাজের এই সমন্বয় তাকে দক্ষ করে তোলে।
ডিজাইনের জগতে পদার্পণ ও সাফল্য
জিসানের ডিজাইন দক্ষতা কেবল পড়াশোনার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। তিনি বিভিন্ন বড় বড় প্রজেক্টে কাজ করে নিজের অভিজ্ঞতা ও সুনাম বৃদ্ধি করেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের "চট্টগ্রাম ফুল উৎসব ২০২৪" এর ব্র্যান্ডিং ও ডিজাইন, দ্য মার্ভেল বি ইউ-এর ইনফ্লুয়েন্সার অ্যাওয়ার্ড শো "মার্ভেল অফ টুমরো"-এর দুটি সিজনের সম্পূর্ণ ব্র্যান্ডিং ডিজাইন এবং ইউএনডিপির "হিউম্যান রাইটস অরিয়েন্টেশন সেশন" ও "স্প্রিংবোর্ড প্রোগ্রাম" এর মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে তার সৃজনশীলতার ছাপ পাওয়া যায়। এসব কাজ তাকে প্রথাগত চাকরির বাইরের এক বড় প্ল্যাটফর্মে পরিচিতি এনে দেয়। বর্তমানে তিনি অ্যানালাইজেন নামের একটি প্রতিষ্ঠানে ডিজাইনার হিসেবে কর্মরত আছেন।
ইউএনডিপির সেরা ডিজাইনার: এক স্বপ্ন সত্যি হওয়ার গল্প
সম্প্রতি, বিশ্ব যুব দিবস উপলক্ষে "তোমার কল্পনার বাংলাদেশ এবার তুলে ধরো AI দিয়ে" শিরোনামে ইউএনডিপির আয়োজিত এক ক্যাম্পেইনে অংশ নিয়ে জিসান তার সেরাটা প্রমাণ করেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা অসংখ্য প্রতিযোগীর মধ্যে থেকে সেরা ১০ জনের তালিকায় স্থান করে নেওয়ার পর তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেন। এই অর্জন শুধু তার ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, বরং এটি তার ৭ বছরের কঠোর পরিশ্রম ও সৃজনশীলতার এক জ্বলন্ত প্রমাণ। ইউএনডিপির পক্ষ থেকে সেরা ডিজাইনারের স্বীকৃতি তাকে আরও বড় স্বপ্ন দেখতে উৎসাহিত করেছে।
আব্দুল্লাহ সাঈদ জিসান প্রমাণ করেছেন যে, বড় স্বপ্ন দেখতে বা পূরণ করতে বড় শহরের প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন হয় শুধু মেধা, কঠোর পরিশ্রম, আর নিজের প্রতি বিশ্বাস। তার এই পথচলা বাংলাদেশের তরুণ সমাজের জন্য এক দারুণ উদাহরণ, যারা নিজেদের স্বপ্ন পূরণের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। জিসান যেন বলে দিচ্ছেন, "স্বপ্ন দেখুন, এবং সেই স্বপ্নের পেছনে ছুটুন। সাফল্য এক দিন আপনার কাছে ধরা দেবেই।"